ওয়েব ডিজাইন কি? ওয়েব ডিজাইন এর ধারণা ও পরিচিতি | Best of 2021!!

ওয়েব ডিজাইন এর সূচনা।

কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যুগে শুধু বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণাগার ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। যেমন প্রতিরক্ষা বা সেনা বাহিনীদের কাছেই ছিল শুধু কম্পিউটার। এই কম্পিউটার গুলো প্রচুর পরিমাণে হিসাব নিকাশ করা, গবেষণালব্ধ তথ্য যাচাই-বাছাই, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার কাজেই তখন ব্যবহৃত হতো। অচিরেই এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা বোধ হয়। এবং ধাপে ধাপে ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট ফাইল এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তরের চাহিদা তৈরি হয়। এই চাহিদা থেকেই টিম বার্নার্স লি (Tim Berners Lee) ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) তৈরি করেন। তিনি তখন সুইজারল্যান্ডের CERN নামক একটি গবেষণাগারে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৯ সালে তিনি এটিও ওয়েবের ধারণা প্রস্তাব করেন। যার মাধ্যমে আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে। এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বিভিন্ন ডকুমেন্ট পাঠানো যাবে। টিমের ধারণা ছিল ওয়েবের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা যেন। তাদের নিজস্ব দেশে বসেই CERN একটি র কম্পিউটার থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তিনি প্রস্তাব করেন একেবারে শত শত পৃষ্টার ডকুমেন্ট ফাইল ডাউনলোড করার ব্যবস্থা না করে। সব পৃষ্টাই যেন আলাদা আলাদা ভাবেই ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা যায়। তাতে করে একেকটি পৃষ্ঠায় অন্যান্য দরকারি পৃষ্টার বিস্তারিত লিঙ্ক দেয়া যাবে। যার যার যেসব পৃষ্টার দরকার। তারাই শুধু শসেটাই ডাউনলোড করবে। আর যাদের সেটা দরকার নাই তারা সেটা ডাউনলোড করবে না। তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্য পাঠানোর লিখিত তথ্যের নাম দেন হাইপারটেক্সট (Hypertext)। এই হাইপারটেক্সট গুলো খুঁজে পাওয়া যাবে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ঠিকানায়। যার নাম হবে হাইপারলিংক(Hyperlink)। লিখিত তথ্যএর বাইরে ছবি, অডিও, ভিডিও জাতীয় তথ্যগুলো কে বলা হয় হাইপারমিডিয়া(Hypermedia)। টিম চিন্তা করেন এমন একটি উপায় করতে হবে যেন। মাউস দিয়ে ক্লিক করলেই ব্যবহারকারীরা হাইপারলিংক থেকে হাইপারটেক্সট পেতে পারেন। ১৯৯০ সালে তিনি তাঁর সহকর্মীদের সহায়তায় তার ধারণা কে আরো সংগঠিত রূপ দিয়ে পুনরায় প্রস্তাব করেন। এই তথ্যগুলো অন্য কম্পিউটারে দেখার জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন। যার নাম দেন ওয়েব ব্রাউজার। এই মূল ধারণার ওপর থেকেই তৈরি করা হয়েছে আজকের ওয়েব। বর্তমানে ইন্টারনেট অসংখ্য ওয়েবসাইট রয়েছে। এই ওয়েবসাইট গুলো নিজের কম্পিউটার থেকে দেখা বা ভিজিটি করার জন্য। আমরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। এই সফটওয়্যার গুলোকে বলা হয় ওয়েব ব্রাউজার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি বিভিন্ন ধরনের ব্রাউজার রয়েছে। যেমন, মজিলা ফায়ারফক্স, গুগল ক্রোম, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, ওপেরা মিনি, ইউসি ব্রাউজার ইত্যাদি।

ওয়েব ডিজাইন

ওয়েব ডিজাইন এর ধারণা

একসময় ওয়েবসাইটগুলো ছিল স্ট্যাটিক(Static)। অর্থাৎ সেখানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য রাখা হতো। এবং ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তথ্য দেখতে পেতেন। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ ওয়েবসাইট স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট নয়। বরং ডায়নামিক(Dynamic) ওয়েবসাইট। যেখানে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ইনপুট দেন। আবার সেই ইনপুট অনুসারে বিভিন্ন ধরনের আউটপুট তৈরি হয়। এজন্য এগুলোকে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনও বলা হয়। এরকম অ্যাপ্লিকেশন এর কিছু উদাহরণ হচ্ছে, Google.Com, Yahoo.Com, iTjani.Com ইত্যাদি।

ওয়েব ডিজাইন এর অংশবিশেষ

একটি ওয়েবসাইটের দুটি অংশ থাকে। যথাঃ সার্ভার ও ক্লায়েন্ট। সার্ভার সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর ইনপুট নিয়ে সার্ভারের কাছে ডেটা পাঠায়। যাকে বলা হয় রিকোয়েস্ট। সার্ভার সেই ডেটা অনুযায়ী ক্লায়েন্ট এর কাছে জবাব বা রেসপন্স পাঠায়। যেমন, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চাইলে। ব্রাউজারে বিভিন্ন তথ্য লিখে ব্যবহারকারী একটি বাটন এ ক্লিক করেন। তখন সেই ডেটা সার্ভারের কাছে যায়। এবং সার্ভার সেই ডেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যদি কোনো সমস্যা না পায়। (যেমন ইতিমধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা আছে)। তখন সার্ভার ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেয়। এবং ক্লায়েন্টের কাছে রেসপন্স পাঠায়। আবার কোনো কারণে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা না গেলেও। ক্লায়েন্টের কাছে রেসপন্স পাঠায়। ডায়নামিক ওয়েব এপ্লিকেশনের ক্ষেত্রেও সবসময়ই সার্ভারের কাছে ডেটা পাঠাতে হবে, এমনটি নয়। বরং অনেক কাজ ক্লায়েন্ট অংশেই সেরে ফেলা সম্ভব। সেজন্য ওয়েবসাইটের ক্লায়েন্ট অংশে প্রোগ্রামিং ব্যবহার করা হয়। এই কাজের জন্য জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা আছে জাভাস্ক্রিপ্ট (Javascript)।

ওয়েব ডিজাইন এর ব্যবহার

সার্ভারে যেই সফটওয়্যার চলে। সেটা সাধারণত একটি প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে লেখা হয়। এসব কাজের জন্য জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা হচ্ছে, পিএসপি, পাইথন, জাভাস্ক্রিপ্ট ইত্যাদি। ব্রাউজারে যে ওয়েবসাইট কিংবা ওয়েব এপ্লিকেশন চলে। সেখানে ব্যবহার করা এইচটিএমএল (HTML) এবং সিএসএস (CSS)। HTML এর পূর্ণরূপ হলো হাইপারটেক্সট মার্কআপ ল্যাংগুয়েজ (Hyper Text Markup Language) । এটা কোনো প্রোগ্রামিং ভাষা নয়। বরং একে মার্কআপ ভাষা বলা হয়। এটার কাজ করা হচ্ছে, কোনো তথ্য ব্রাউজারে প্রদর্শন করার জন্য উপযোগী করে তোলা। এখানে যেসব ট্যাগ ব্যবহার করা হয়। ব্রাউজার সেগুলো বুঝতে পারে এবং সে অনুযায়ী ওয়েবসাইটে ডাটা প্রদর্শন করে। শুধু এইচটিএমএল ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করা গেলেও। ওয়েবসাইটকে আরো আকর্ষণীয় ও সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সিএসএস। যার পূর্ণরুপ হচ্ছে ক্যাসকেডিং স্টাইল শীট (Cascading Style Sheet)। আধুনিক সব ওয়েবসাইটেই এইচটিএমএল এর সঙ্গে সিএসএস ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন,
• কিভাবে মোবাইলে মাউস ব্যবহার করবেন।

# ওয়েব ডিজাইন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *