ওয়েবসাইট এর খুটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা।
আমরা যখনই একটি ওয়েবসাইট তৈরি নিয়ে চিন্তা করতে যাই। তখনই আমাদের ওয়েবসাইট সম্পর্কে অনেকগুলো বিষয় পাক খায়। যেমন, ডোমেইন হোস্টিং কি ? ব্যান্ডউইথ কি? সাবডমেইন কি? ডেটাবেজ কি? ইত্যাদি। আজকে আমরা এই বিষয় গুলো নিয়েই আলোচনা করবো। তো চলুন তাহলে শুরু করা যাক,
ডোমেইন হোস্টিং কি
ডোমেইন
কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ এর জন্য আমরা যে এড্রেসটি ব্যবহার করি সেটাই হলো ডোমেইন। একটা কথায় বলতে গেলে কোনো ওয়েবসাইট এর নামই হলো ডোমেইন। ডোমেইন নেম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন ডট কম(.com), ডট নেট(.net), ডট ইনফো(.info), ডট ওয়ারজি(.org) ইত্যাদি। ডোমেইন দুই রকমের হয়ে থাকে। একটা হলো টপ লেভেল ডোমেইন। টপ লেভেল ডোমেইন বলতে আপনার ওয়েবসাইট এর নামের পরে যে এক্সটেনশন গুলো থাকবে। যেমন Google.com, Yahoo.com, iTjani.com ।
সাবডোমেইন
আর আরেকটা একটা হলো সাবডোমেইন। আপনার মেইন ডোমেইন নেম এর পূর্বে কিছু শব্দ ব্যবহার করে আরেকটি ডোমেইন তৈরি করাকেই বলে সাবডোমেইন । আমরা ব্লগারে যখন কোনো ওয়েবসাইট খুলি। তখন সেই ওয়েবসাইটের নাম হয় (কিছু একটা)blogspot.com এমন। যেমন, itjani.blogspot.com, me.itjani.com। সাবডোমেইন গুলোও এক প্রকার ওয়েবসাইট। এটা দিয়ে সাধারণ ওয়েবসাইট এর মতো সব কাজ করা যায়।
হোস্টিং
আপনারা যখন কোনো একটা ওয়েবসাইট ভিজিট করে থাকবেন। তখন ওয়েবসাইটে গেলে আপনারা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট দেখতে পাবেন। যেমন, আপনি যদি iTjani.com ভিজিটি করেন। তাহলে বিভিন্ন আর্টিকেল দেখতে পাবেন। যেখানে লেখালেখির পাশাপাশি ছবিও থাকে। তাছাড়াও আরো অনেক ফাইল থাকে। এখন প্রশ্ন হতে পারে এগুলো কোথায় থাকে? এগুলো থাকার জন্যেও একটা জায়গা বা স্পেস প্রয়োজন। মূলত এই জায়গাটাই হলো হোস্টিং।
হোস্টিং এমন একটা জায়গা যেখানে আপনার সাইটের সব ফাইল রাখা হয়। যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে। তখন আপনার ওয়েবসাইট সেই ফাইল গুলোকে নিয়ে ভিজিটরদেরকে শো করায়। আপনারা চাইলে আপনার কম্পিউটারের হার্ডডিক্স ব্যবহার করেও সেটাকে হোস্টিং এর কাজে লাগাতে পারবেন। কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটকে ২৪ ঘন্টা একটিভ রাখার জন্য আপনার কম্পিউটারকেও ২৪ ঘন্টায় একটিভ রাখতে হবে। যেটা হলো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
পড়ুন, • নিজের ওয়েবসাইট দিয়ে ইনকাম করুন।
তাই আপনারা ওয়েবসাইটের সকল ডেটাগুলো এমন একটা প্লাটফর্মে রাখতে হবে। যেখানে আপনার সার্ভারটি ২৪ ঘন্টায় একটিভ বা অনলাইন থাকবে। অনলাইনে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ডোমেইন হোস্টিং দুটোই প্রভাইড করে থাকে। এরকম কাজগুলো করার জন্য কোম্পানি গুলো বিভিন্ন ধরনের সার্ভার তৈরি করে রেখেছে। যেখানে থেকে আমরা মাসিক বা বার্ষিক ভাবে হোস্টিং কিনে নিতে পারি।
ডোমেইন হোষ্টিং কি এটা জানা হয়ে গেল। একটা হোস্টিং এর মধ্যে অনেক কিছু থাকতে পারে। যেমন ধরুন, স্পেস, ব্যান্ডউইথ, ডেটাবেস, ইমেইল একাউন্ট ইত্যাদি।
ব্যান্ডউইথ
প্রত্যেকটা ওয়েবসাইটেরই একটা সাইজ থাকে। যেমন ধরুন আপনার ওয়েবসাইটের হোম পেজের সাইজ হলো ২ মেগাবাইট। তো যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করে। তখন সে আপনার ওয়েবসাইট থেকে 2 মেগাবাইট সাইজ খেয়ে নেবে। এভাবে আপনারা যদি দশজন ভিজিট করে। তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের মোট (২×১০) ২০ এমবি খরচ হয়ে যাবে। আবার একই মানুষ যদি ৫ বার ভিজিট করে তাহলে (২×৫) ১০ এমবি খরচ হবে। মূলত এই মেগাবাইটই হলো ব্যান্ডউইথ।
পড়ুন, • কিভাবে ফ্রিতে একটা Website তৈরি করবেন।
প্রত্যেকটা হোস্টিং প্রোভাইডাররাই হোস্টিং এর সাথে ব্যান্ডউইথ প্রদান করে। এরা প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যান্ডউইথ দিয়ে থাকে। যেমন ধরুন আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য তারা ৫০ জিবি ব্যান্ডউইথ দিলো। তো এই ৫০ জিবি ব্যান্ডউইথ যদি ফুরিয়ে যায়। তখন আপনার ওয়েবসাইটটা ডাউন হয়ে যাবে। তখন আপনার হোস্টিং কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে আপনার হোস্টিং এর ব্যান্ডউইডথ বাড়িয়ে নিতে হবে। অথবা অই মাসটা অপেক্ষা করতে হবে। মাস শেষ হলেই আপনার ব্যান্ডউইথ আবার নতুন করে শুরু হবে। ডোমেইন হোস্টিং কি এর সাথেই ব্যান্ডউইথ দেওয়া হয়।
ডেটাবেজ
আপনার ওয়েবসাইটে যখন কোনো ইউজার রেজিস্ট্রেশন করে। তখন সে তার বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিয়ে থাকে। যেমন ইউজারনেম, নাম, ইমেইল, পাসওয়ার্ড, ঠিকানা ইত্যাদি। এই তথ্যগুলো হোস্টিং এর একটা জায়গায় সংগ্রহ করে রাখা হয়। সে জায়গাটিই হলো ডাটাবেজ বা মাইএসকিউএল ডাটাবেজ। এখানে খুব সুন্দর ভাবে টেবিল আকারে ইউজারদের সকল ডিটেলস সাজানো থাকে। যার ফলে আপনার যে কারো তথ্য দরকার প্রয়োজন হলে। টেবিল আকারে তাদের সব রকম তথ্য পেয়ে যাবেন। এটাই হলো ডেটাবেজ এর কাজ। ডোমেইন হোস্টিং কি।
সিপ্যানেল
কন্ট্রোল প্যানেল এর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে সিপ্যানেল। আপনি যখন একটা হোস্টিং কিনে থাকবেন। তখন আপনার হোস্টিং প্রোভাইডার আপনাকে একটা কন্ট্রোল প্যানেল এর এক্সেস দিবে। যেখান থেকে আপনার সাইটের সব কিছু করা যাবে। অর্থাৎ পুরো হোস্টিং টাও সেখান থেকে কন্ট্রোল করা যাবে। সেখানেই হোস্টিং এর সকল ধরনের ডিটেলস থাকে। যেমন ফাইল ম্যানেজার, ব্যাকআপ, এডঅন ডোমেইন, মাইএসকিউএল ডাটাবেজ (MYSQL Database), সফটওয়্যার ইন্সটল ইত্যাদি।
ইমেইল
আপনারা হোস্টিং কিনতে যান। তখন লক্ষ করবেন লেখা থাকে Unlimited Email Address। অর্থাৎ কতগুলো ইমেইল এড্রেস আপনার হোস্টিং এ ব্যবহার করা যাবে। এই ইমেইল অ্যাড্রেস গুলা মূলত আপনার ডোমেইন কে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। যেমন আপনারা যদি কোনো জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলে থাকেন। সেখানে কিন্তু প্রথমে আপনার নাম বা ইউজারনেমটি থাকে। তারপর @gmail.com এমন থাকে।
এখানেও ঠিক একই ভাবে আপনি আপনার নিজের ওয়েবসাইট এর জন্য। কাস্টম ইমেইল এড্রেস তৈরি করতে পারবেন। সেখানেও আপনার এড্রেস নামটি হবে। এরপর আপনার ওয়েবসাইটের এড্রেস টি হবে। যেমন, [email protected], [email protected]।
তো এই মেইল গুলো সাধারণ ইমেইলের মতো ব্যবহার করা যায়। এটা ব্যবহারের জন্য আপনার হোস্টিং এ লগিন করে Email Accounts নামে একটা অপশন আছে। সেখান থেকেই সবকিছু কন্ট্রোল করতে পারবেন। চাইলে নিজের জন্য সব রকমের ইমেইল তৈরি করে নিতে পারবেন।
আশা করি আপনাদেরকে ওয়েবসাইট এর বিষয়গুলো ( ডোমেইন হোস্টিং কি , সাবডোমেইন, সিপ্যানেল, ডাটাবেজ, ইমেইল ) নিয়ে ধারণা দিতে পেরেছি।
আরও পড়ুন,
Pingback: ওয়ার্ডপ্রেস কি? কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস সাইট তৈরি করবেন? Best of 2021 - iTjani.Com
Pingback: কিভাবে ডোমেইন হোস্টিং কিনবেন? ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার আগে করণীয়? Best for 2021 - iTjani.Com